জেলা প্রতিনিধি, খাগড়াছড়ি: দেশে আগামী ১৫-২১ জুন শুরু হচ্ছে জনশুমারী ও গৃহগণনা। ২০২১ সালের এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সার্বিক সহযোগিতার জন্য দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন খাগড়াছড়ির হেডম্যান, কার্বারী, সামাজিক সংগঠনের নেতারা ।
ঐতিহ্যবাহী সামাজিক নেতৃবৃন্দ ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দরা বলেছেন, তারা জনশুমারী ও গৃহগণনায় যাবতীয় সহযোগিতা প্রদানের প্রস্তুত আছেন। প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে সভায় অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে মতবিনিময় ও আলোচনা সভায় এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তারা।
শনিবার (১১জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় খাগড়াছড়ি জেলা শহরের মিলনপুরস্থ হোটেল গাইরিং সম্মেলন কক্ষে এ সভার আয়োজন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটি, খাগড়াছড়ি জেলা হেডম্যান ও কার্বারী এসোসিয়েশন এবং এএলআরডি। সভায় হেডম্যান-কার্বারী ছাড়াও স্থানীয় এনজিও প্রতিনিধি,সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
সভায় অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্যে বক্তারা বলেন, ‘‘জনশুমারি হয়তো শতভাগ “নির্ভূল” হবে না। আমরা আশা করছি, আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে এবারের জনশুমারি ভালো হবে।’ এতে সামাজিক সংগঠনসহ প্রথাগত প্রতিষ্ঠান প্রধানেরা যাতে সহযোগিতা প্রদান করেন, সে অনুরোধ করেন। সম্ভব হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ব-স্ব মাতৃভাষায় অডিও-ভিডিও প্রকাশেরও অনুরোধ করেন। এতে করে ভাষাগত অসুবিধা থাকলেও তা সাধারণ মানুষরা সহজে বুঝতে পারবে। ভাষাগত পার্থক্যের কারণেও জরিপে ভূল হতে পারে শঙ্কায় সেখানকার স্থানীয় সামাজিক ও প্রথাগত প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দদের সহযোগিতা প্রদানের অনুরোধ করা হয়।
মতবিনিময় সভায় খাগড়াছড়ি জেলা হেডম্যান এসোসিয়েশনের জেলা শাখার সভাপতি ও হাফছড়ি ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান চাইথোয়াই চৌধুরীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুশীল জীবন ত্রিপুরা, কার্বারী এসোসিয়েশনের জেলা শাখার সভাপতি রনিক ত্রিপুরা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি হরিপূর্ণ ত্রিপুরা, এএলআরডির প্রতিনিধি মোঃ শফিকুল ইসলাম, মারমা উন্নয়ন সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ মংসাঅং মারমা, জাবারাং কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা, সিএইচটি নারী হেডম্যান নেটওয়ার্কের সভাপতি জয়া ত্রিপুরা প্রমুখ।
এসময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক স্নেহাশীষ ত্রিপুরা, খাগড়াছড়ি জেলা হেডম্যান এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক স্বদেশ প্রীতি চাকমা, বাইল্যাছড়ি মৌজার হেডম্যান ত্রিদ্বীব নারায়ন ত্রিপুরা, ত্রিপুরা স্টুডেন্টস্ ফোরামের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি (যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক) দহেন বিকাশ ত্রিপুরা, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিলের প্রতিনিধি (জেলা কমিটির নারী বিষয়ক সম্পাদক) নাইম্রাস্যাং মারমা প্রমুখ ।
দেশের প্রথম জনশুমারি হয় ১৯৭৪ সালে। পরিসংখ্যান আইন ২০১৩ অনুযায়ী ‘আদমশুমারি’কে জনশুমারি বলা হয়। বিশ্বের সব দেশে জনশুমারি এবং গৃহগণনা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যাপকভিত্তিক পরিসংখ্যান কার্যক্রম। দশ বছর পর পর জনশুমারি অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশে দ্বিতীয় জনশুমারি হয় ১৯৮১ সালে। তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম জনশুমারি যথাক্রমে ১৯৯১, ২০০১ এবং ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত হয়।
করোনার কারণে ২০২১ সালে দেশে জনশুমারি করা সম্ভব হয়নি। যা এবার ১৫ থেকে ২১ জুন এটি পরিচালিত হবে।