সূভাষ চন্দ্র হেমব্রম (গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে ফিরে): সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্মের ভূমি আমাদের বাপ দাদার সম্পত্তি। আমরা আমাদের সম্পত্তি ফেরত চাই। আমরা আমাদের সম্পত্তিতে কোন ধরনের ইপিজেড চাই না। আর এটা আমাদের যৌক্তিক দাবি। আমরা বেআইনি কোনো কাজ করিনি, করবো না। আমাদের এই সংগ্রাম বাপ দাদার সম্পত্তি ফেরত পাওয়ার সংগ্রাম, বেঁচে থাকার সংগ্রাম। ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর শ্যামল হেমব্রম, মঙ্গল মার্ডি, রমেশ টুডুকে হত্যা করা হয়েছিল। আমরা তাদের হত্যার বিচার চাই। অনতিবিলম্বে সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্মের তিন ফসলী জমিতে ইপিজেড করার যে পরিকল্পনা করা হয়েছে তা বন্ধ করতে হবে এবং আমাদের বাপদাদার সম্পত্তি আমাদেরকে সরকার ফেরত দিবে। বললেন সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে।
সাহেবগঞ্জ- বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি গোবিন্দগঞ্জ, গাইবান্ধা আয়োজনে গতকাল ২ অক্টোবর ২০২১ দুপুর ১২ টা থেকে কাটামোড় এলাকায় সমাবেশ করে। এর আগে জয়পুর- মাদারপুর – দিনাজপুর ঢাকা মহাসড়ক দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে সমাবেশ স্থল কাটামোড়ে এসে শেষ হয়।
সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি সভাপতি ডাঃ ফিলিমন বাস্কে’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য এ্যাড. বাবুল রবিদাস, সাধারণ সম্পাদক সবিন চন্দ্র মুন্ডা, কোষাধ্যক্ষ সুধীর তির্কী, দপ্তর সম্পাদক সূভাষ চন্দ্র হেমব্রম, রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নরেন চন্দ্র পাহান, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মানিক সরেন, রংপুর সদর উপজেলা কমিটি সাধারণ সম্পাদক বিমল খালকো, নববাগঞ্জ সভাপতি বাবলু টুডু, বদরগঞ্জের ডাঃ শ্যামল টুডু, বিশিষ্ট সমাজ সেবক সূর্য্য হেমরম, সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) রেজাউল করিম মাস্টার, সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন শেখ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সুফল হেমব্রম, গাইবান্ধা জেলা বার এ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. সিরাজুল ইসলাম বাবু, গাইবান্ধা সামাজিক সংগ্রাম পরিষদ সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর কবির তনু, মানবাধিকার কর্মী শাহ্ মমিন জিন্নাহ, সন্ধ্যা মালো, মাথিয়াস মার্ডি, চিত্তরঞ্জন পাহান, মামলার বাদী থমাস হেমব্রম উত্তরবঙ্গ আদিবাসী ফোরাম দিনাজপুর শ্যামল মার্ডী, সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি সহকারী কোষাধ্যক্ষ। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন প্রিসিলা মুরমু।
সাহেবগঞ্জ-বাগদা-ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির ব্যানারে আয়োজিত সমাবেশে রাজশাহী, নওগাঁ, দিনাজপুর ও গাইবান্ধা অঞ্চলের আদিবাসী সাঁওতাল নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন নেতৃবৃন্দসহ সুশীল সমাজের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম এলাকা থেকে ইপিজেড করার মাধ্যমে আদিবাসীদের উচ্ছেদ করার এক মহাপরিকল্পনা করা হয়েছে। এই তিন ফসলি জমিতে প্রচুর পরিমাণে খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়। সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্মের এই তিন ফসলি সম্পত্তিতে ইপিজেড করা চলবে না। আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে, শরীরের এক ফোঁটা রক্ত থাকা পযর্ন্ত আমরা আমাদের বাপদাদার সম্পত্তি ফেরত চাই। আদিবাসীদের আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি, সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় ও স্বাধীন ভূমি কমিশন গঠন। গাইবান্ধা নাগরিক মঞ্চ দাবি তুলেছে গাইবান্ধায় যদি ইপিজেড ( EPZ) করতে হয় তাহলে গাইবান্ধায় পলাশবাড়ী উপজেলার সাকোয়া ব্রিজ এলাকায় তৈরী করেন এই এলাকায় অর্থনৈতিক অঞ্চলের ব্যাপক সম্ভবনা রয়েছে।
অবিলম্বে গোবিন্দগঞ্জের সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম কৃষি জমিতে ইপিজেড স্থাপনের প্রকল্প বাতিল করে ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া তিন আদিবাসী সাঁওতাল পরিবারসহ নিহত-আহতদের সব পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবিও জানিয়েছেন বক্তারা।