তরুণ প্রজন্মকে বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার জীবনীকে পাঠ করতে হবে বলে এমএন লারমার ৮২ তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। আজ ১৬ সেপ্টেম্বর সকাল ১১ টায় ”মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার চেতনায় উজ্জীবিত নব প্রজন্ম” এর আয়োজনে অনলাইন আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয় । অনুষ্ঠানটি আদিবাসী অনলাইন নিউজ পোর্টাল আইপিনিউজ এর ফেসবুক পেইজে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছে।
ফেরদৌস আহমেদ উজ্জলের সঞ্চালনায় আলোচনায় বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সাংবাদিক নজরুল কবীর, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক দেবাশীষ কুন্ড, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. রিজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান মাসুম, আদিবাসী যুব ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক টনি ম্যাথিউ চিরান, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিপন ত্রিপুরা প্রমূখ।
আলোচনার শুরুতে এমএন লারমার জীবনী পাঠ করেন আদিবাসী ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য মেইনথিন প্রমীলা।
আলোচনা সভায় নজরুল কবীর বলেন, এমএন লারমা শুধু জুম্ম জনগোষ্ঠীর নেতা নয় তিনি নিপীড়িত মানুষের নেতা ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শ্রেণী আন্দোলনে তার ভূমিকা অনন্য। সংবিধানে ভিন্ন মত ও চিন্তা ছড়িয়ে দেয়া ২ জন ব্যক্তি মধ্যে তিনি অন্যতম। তাকে জাতীয় নেতা হিসেবে পাঠ করার এবং তার লড়াই সংগ্রামের ইতিহাসকে জাতির সামনে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক দেবাশীষ কুন্ড বলেন, বাংলাদেশে বহুত্ববাদী চিন্তা ও কাজের প্রথম ব্যক্তি বিপ্লবী এমএন লারমা। শুধু তাই নয় বহুত্ববাদ ও সমতাবাদী চিন্তার অন্যতম জনকও আমরা তাকে বলতে পারি। তিনিই প্রথম প্রতিবাদ করে সংসদ থেকে ওয়াক আউট করা ব্যক্তি। সব ভাষা, শ্রেণী, ধর্ম-বর্ণ ও মতবাদের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করবে, এই কথাটা এম এন লারমা ছাড়া তৎকালীন সময়ে ভাববার কিংবা দৃঢ়তার সাথে বলবার মতন কেউ ছিলনা। তাকে কেবল জুম্ম জাতিগোষ্ঠীর নেতা নয়, বরং জাতীয় নেতা হিসেবে পরিচয় দিতে হবে।
জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. রিজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা বলেন, তিনি নিপীড়িত মানুষের নেতা ছিলেন। শুধু তাই নয় তিনি সাম্যের বাংলাদেশের বাসনা দেখেছিলেন আর নারীকে শ্রেণীসংগ্রামে যুক্ত করার পেছনে তিনি অন্যতম ব্যক্তিত্ব। এম এন লারমার যে দূরদর্শীতা দেখিয়েছেন, সে সময়ের সংবিধান রচয়িতা এবং সাংসদরা সেই দূরদররশীতা দেখাতে পারেনি। এম এন লারমার স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে দেওয়ার দায়িত্ব এই প্রজন্মের। এম এন লারমা আমাদের শক্তি দেন, আমাদের অনুপ্রেরনা দেন। তাকে সত্যিকার অর্থে পাঠ করতে হবে।
বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান মাসুম বলেন, পৃথিবীর সকল অসংবাদিত নেতার মতই এমএন লারমা মাত্র ৪৪ বছর বেঁচেছিলেন কিন্তু তার এই বর্নাঢ্য সংগ্রামী জীবন সম্পর্কে তরুণ প্রজন্ম প্রায় জানেইনা। তাকে নতুন প্রজন্মের সামনে নিয়ে যেতে হবে।