বান্দরবানের চিম্বুকে নাইতং পাহাড়ে ম্রো আদিবাসীদের নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ করে সিকদার গ্রুপ এবং সেনা কল্যাণ ট্রাস্ট কর্তৃক পাঁচ তারকা হোটেল ও পর্যটন স্থাপনা নির্মাণ এখনো অব্যাহত রেখেছে।এ নিয়ে গত ৭ ফেব্রুয়ারী বান্দরবানে লংমার্চ করেছে স্থানীয় ম্রো আদিবাসীরা।তারই ধারাবাহিকতায় গত ১০ ফেব্রুয়ারী হোটেল নির্মাণ অব্যাহত রাখার প্রতিবাদে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ আহ্বান করে। এ নিয়ে প্রক্টর অফিস থেকে যথাযথ অনুমতিও নেয়া হয়।কিন্তু মানববন্ধন আয়োজনের ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে প্রক্টর আয়োজক সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে ডেকে পাঠান এবং মানববন্ধন স্থগিতকরণ এবং আয়োজিত স্থান শহীদ মিনার ত্যাগ করার জন্য বলেন।
মানববন্ধন বন্ধের এই ‘আচমকা স্থগিতাদেশের’ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে সংগঠনটি।এ প্রসঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রুমেন চাকমা বলেন, ‘চিম্বুক পাহাড়ে ম্রো জনগোষ্ঠীর জায়গায় পাঁচতারকা হোটেল বানানোর প্রতিবাদে আমরা মানববন্ধনের ডাক দিয়েছিলাম। আগের দিন প্রক্টরের কাছ থেকে লিখিত অনুমতিও নেওয়া হয়েছিল। তবে ওইদিন রাত ১১টায় প্রক্টর ফোন দিয়ে মানববন্ধন না করার জন্য বলেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এটা বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্নিষ্ট ইস্যু নয়। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের মানববন্ধন করা যাবে না। মানববন্ধন করতে হলে বাইরে করতে হবে। তবে আমরা গতকাল (বুধবার) সকাল ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে ২৫-৩০ শিক্ষার্থী প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। ১৫-২০ মিনিট পর প্রক্টর ডেকে পাঠান। আমরা প্রক্টর অফিসে গেলে শহীদ মিনার থেকে চলে যেতে বলেন। তারপর আমরা চলে আসি।’
এক বিবৃতিতে সংগঠনটি জানায় যে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ কর্মসূচি আয়োজনের জন্য পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের নেতৃবৃন্দকে ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে লিখিত অনুমতি প্রদান করলেও একই তারিখে রাত ১০:৩০ ঘটিকায় সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে আজকের (১০ ফেব্রুয়ারী) কর্মসূচি ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে আয়োজন করা যাবে না বলে জানান। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতির পর আচমকা স্থগিতাদেশে ঐক্যফাটলকারী, ষড়যন্ত্রকারী ও কুচক্রী এক বিশেষ মহলের হাত রয়েছে বলে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ মনে করে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এরকম সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদও জানিয়েছে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের চবি শাখার সাধারন সম্পাদক শ্রাবণ চাকমা স্বাক্ষরিত উক্ত বিবৃতির মাধ্যমে সংগঠনটি পূর্বঘোষিত তাদের কর্মসূচি স্থগিত রাখার ঘোষণা দেয় এবং সেই সাথে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে গুটিকয়েক সংগঠনের জন্য অভয়ারণ্য হিসেবে গড়ে না তোলে গণতান্ত্রিক ও মুক্ত চিন্তার পরিবেশ তৈরির জন্য আহ্বান জানায় বিবৃতিতে।এছাড়া পরর্বতীতে এ কর্মসূচি আবারও আয়োজন করবে বলে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং সেই আন্দোলনে অংগ্রহনের জন্য সবাইকে আহ্বানও জানায় সংগঠনটি।