রাত পোহালে ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৩তম বর্ষপূর্তি জাতির সামনে হাজির হবে। এই চুক্তিকে ঘিরে জুম্ম জনগণের মনে অনেক চাওয়া-পাওয়া, আশা-আকাঙ্খা ও বুকের ভেতর তিল তিল করে জমানো স্বপ্নগুলো আজও উঁকি দিয়ে যাচ্ছে। আজ হতে প্রায় ৪০-৪৮ বছর আগে আত্মীয়স্বজন, ঘরবাড়ি, মা-বাবা, বন্ধু-বান্ধবী ও তাঁর আপনজনদের ছেড়ে সশস্ত্র সংগ্রামে চলে যাওয়া যৌবনের টগবগে ছেলেটি আজ বয়োবৃদ্ধ হয়েছে। দীর্ঘ দুই যুগের অধিক সশস্ত্র লড়াই সংগ্রামের পর ১৯৯৭ সালে ২ ডিসেম্বর এদিনে অনেক আশা ও স্বপ্নকে বুকে নিয়ে নিজের আপনজনের কাছে ফিরে এসেছিলেন। এবার বুঝি পাহাড়ের বুকে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠিত হবে এই আশায়। দীর্ঘ ২৫ বছরের সংগ্রামের শত প্রতিকূলতার জীবনের অবসান ঘটিয়ে এক টুকরো শান্তি, সুখ ও সম্ভাবনাময় জীবনের আশায় সেদিন শাসকগোষ্ঠীর কাছে অস্ত্র সমর্পণ করেছিলেন। সশস্ত্র লড়াই সংগ্রামের ময়দানে সেই প্রিয় অগ্রজদের ত্যাগ, রক্ত, ঘাম ও অক্লান্ত শ্রম যখন শাসকগোষ্ঠীর কাছে যথাযথ মূল্যায়ন ও স্বীকৃতি মেলে না তখন পরিস্থিতি আরও কতটাই ভয়াবহ ও জটিল হতে পারে তা কেবলমাত্র সময়ের দাবী। জুম্ম জনগণ কোন উপায় না পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতোই যখন সশস্ত্র লড়াই সংগ্রাম শুরু করতে যাবে তখন পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি দুই যুগের অধিক সশস্ত্র সংগ্রামের চেয়েও অধিক পরিমাণে জটিল আকার ধারণ করবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। লক্ষ লক্ষ জুম্ম জনগণের আশা ও স্বপ্নকে ধ্বংস করে দিয়ে অত্যাচারী শাসকগোষ্ঠী শান্তিতে থাকতে পারবে বলে যদি মনে করেন তাহলে অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে ভুল হয়েছে মনে করি। তারজন্য মাশুল গুনতে হবে দ্বিগুণের চেয়েও বেশি। তাই এখনও সময় আছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর কর্মসূচি গ্রহণ করুন এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক সমস্যা যথাযথ সমাধানে এগিয়ে আসুন।
ক্ষোভ, দুঃখ আর হতাশা ঝড়ছে আজ পার্বত্য চট্টগ্রামের সূর্য সন্তান সশস্ত্র লড়াই সংগ্রামের বীরযোদ্ধাদের হৃদয়ে। রক্ত আর ত্যাগের বিনিময়ে তারা ১৯৯৭ সালে ২ ডিসেম্বর ছিনিয়ে এনেছিলেন পাহাড়ের গণমানুষের জন্য মুক্তির সনদ পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের দুই যুগের অধিক সশস্ত্র লড়াই সংগ্রামের বীরযোদ্ধাদের প্রতিক্রিয়া আজ ভাবলেশহীন চোখে এবং কেউবা চোখের পানিতে ব্যক্ত করেছে তাদের ক্ষোভ, দুঃখ, হতাশা ও চরম ঘৃণার কথা। শাসকগোষ্ঠী দীর্ঘ ৪০-৪৮ বছর যাবত পাহাড়ের মানুষকে যে কষ্ট দিয়েছে তা কোনোভাবেই তারা মেনে নিতে পারছে না। অনেককেই আজ ক্ষোভের সাথে বলতে শুনেছি, এসব দেখার জন্যই কি জায়গাজমি, স্বজন ও সহযোদ্ধা হারানোর ব্যাথা নিয়ে সরকারের সাথে চুক্তি করেছি? এরকম বাঁচার চেয়ে নতুন করে যুদ্ধে প্রাণ দেওয়াটাই যথেষ্ট হবে। কত বঞ্চিত ও প্রতারিত হলে মানুষ এভাবে বলতে পারে তা ভুক্তভোগী নাহলে সত্যিই অনুভব করা যায় না। আজ পার্বত্য চট্টগ্রাম জুম্ম জনগণের শাসকগোষ্ঠীর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশের কোনো ভাষা নেই বলেই অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তারপরও পার্বত্য চট্টগ্রাম জুম্ম জনগণের জাতীয় অস্তিত্ব ও জন্মভূমির অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে শেষ জীবনটাও বলিদান দেওয়ার জন্য দীপ্ত কন্ঠে শপথ নিয়েছেন।
আজ সমগ্র জুম্ম জনগণের ভীষণ হতাশা আর চাপা ক্ষোভে গুমরে মরারই কথা। তারপরও রাষ্ট্রের চোখ রাঙানী আর তার চুড়ান্ত উগ্র মুসলিম ধর্মান্ধ ও উগ্র বাঙালি জাতীয়তাবোধের সামনে চোখে চোখ রেখে মাথা সোজা করে রুখে দাঁড়াতে পাহাড়ের নতুন প্রজন্ম আজ নিজেকে প্রস্তুত করছে। হ্যাঁ, জুম্ম তরুণ প্রজন্মের এমন বহু জন চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলনে শরিক হয়েছে যাদের জীবন উৎসর্গের জন্য জুম্ম জাতিকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আর আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, সেই প্রতিশ্রুতি থেকে নিজেকে তারা কখনো দূরে রাখবে না। তাই তো আন্দোলনের বাঁকা পথে নেমেছে এক ঝাঁক স্বপ্ন দেখা জুম্ম তরুণ, পথচলার মধ্যে দিয়ে সঠিক পথ চিনে নেওয়া এবং পথের সংগ্রামী সাথীদের সঙ্গে পায়ে পা মেলানোর জন্য নিজেকে তৈরি করে চলেছে। স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে জুম্মরাও প্রজন্মের পর প্রজন্ম বয়ে বেড়াচ্ছে স্বাধীনতার রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের স্মৃতি আর পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর ক্ষত চুঁইয়ে পড়া রক্তের দাগ। এই সব মিলিয়ে তো তৈরি হয়েছে বাংলার ইতিহাস। পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণও সেই ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। তবুও কেন আজ আমাদের উপর বঞ্চনা ও শোষণের কালো থাবা এবং আমাদেরকে আপন করে নেওয়ার কার্পণ্য কেন? হয় তুমি আমার সুরে সুর মিলিয়ে কথা বলো, নতুবা তুমি শত্রুপক্ষ’। শাসকগোষ্ঠীর এমন আচরণ আমাদেরকে ভীষণ যন্ত্রণা দেয়। তোমাদের সুর সুর মেলানো মানেই আমাকে বাঙালির পরিচয়ে পরিচিত হতে হবে! এমন তো হওয়ার কথা ছিল না। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার আদায়ের সমর্থনে প্রতিরোধের কন্ঠকেই আজ তকমা দেওয়া হচ্ছে দেশদ্রোহী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসাবে। বিষয়টি খুবই বেদনা ও যন্ত্রণার মনে হয়!
সময়ের আবর্তনে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি কৈশোর পেরিয়ে যৌবনের পদার্পণ করেছে। এই মহা মূল্যবান সময় অপচয়ের গ্লানি মোচনের জন্য পাহাড় আরও নতুন করে জেগে উঠবে। শাসকগোষ্ঠীর বেঈমান ও প্রতারণার বিরুদ্ধে প্রতিশোধের আগুন অন্তরের গভীরে শক্ত করে গেঁথে নিয়ে জুম্ম জাতির মুক্তির জন্য দীপ্ত শপথ বুকে নিয়ে অসংখ্য জুম্ম তরুণ আরও লড়াইয়ে সামিল হবে। প্রিয় অগ্রজরা যেমনি অসংখ্যবার শত্রুর সাথে লড়াই করে অসীম সাহসিকতা নিয়ে নিজেদেরকে অনেকবার মৃত্যুর কিনারা থেকে ফিরে আনতে সক্ষম হয়েছিল তেমনি আবারও এই ভূমিতে সাহসিকতার এমন দৃষ্টান্ত প্রজন্ম হতে প্রজন্ম বহন করে চলবে। তাই পাহাড়ের পরিস্থিতি অন্যদিকে মোর নেওয়ার আগে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে আন্তরিকতার সহিত এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।
চুক্তির আগে দীর্ঘ দুই যুগের অধিক সশস্ত্র লড়াই সংগ্রামের সময় যারা নিজের জীবনকে বাজি রেখে জুম্ম জাতির মুক্তির দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলো তাদেরকে আজ শাসকগোষ্ঠী ন্যুনতম বেঁচে থাকার অধিকার থেকেও বঞ্চিত করে রেখেছে। প্রয়াতনেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা ও বর্তমান নেতা সন্তু লারমার সুদক্ষ নেতৃত্বের নিকট শাসকগোষ্ঠী মাতা নত করে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষর করতে বাধ্য হয়। চুক্তির মধ্যে দিয়ে জুম্ম জনগণের চোখেমুখে ফুটে উঠেছিলো আশার আলো এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের দশ ভাষাভাষী জুম্ম জনগণ দেখতে পেয়েছিলো আগামী দিনের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। যাদের অবস্থান পাহাড়ময় এবং ত্যাগ ও সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে পাহাড়ের বুক ছিঁড়ে আপোষহীন লড়াইয়ে সামিল হয়েছিলো, যাদের ঘাম ও রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির একমাত্র মুক্তির সনদ, সেই চুক্তি আজ শাসকগোষ্ঠীর নির্মম, নির্যাতনে ক্ষত-বিক্ষত ও বিলুপ্তপ্রায় জুম্ম জনগণের জাতীয় অস্তিত্ব ও জন্মভূমির অস্তিত্ব। চুক্তি অনুযায়ী অর্জিত পার্বত্য জেলা পরিষদ ও পার্বত্য মন্ত্রণালয় জুম্ম জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য প্রধান ভূমিকা পালন করার কথা থাকলেও সেই পার্বত্য মন্ত্রণালয় ও জেলা পরিষদে আজ সরকার দলীয় দালাল ও জুম্ম জাতির বেঈমানদের বসিয়ে উক্ত পরিষদকে কলঙ্কিত করা হচ্ছে এবং দুর্নীতির আঁকড়ায় পরিণত হয়েছে। রক্তেগড়া চুক্তির ফসল আজ জুম্ম জনগণের ভাগ্যে জুটে না বরং জুম্ম জাতির কুলাঙ্গার, দালাল ও বেঈমানরাই এই চুক্তির ফসল গোগ্রাসে গিলে নিচ্ছে। শাসকগোষ্ঠী আজ পার্বত্য চট্টগ্রামে সেইসব জুম্ম জাতির কুলাঙ্গার ও বেঈমানদের দিয়ে চুক্তি বিরোধী কার্যক্রম জোরদার করে চলেছে।
এক একটি করে চলে গেলো জুম্ম জাতির অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জাতীয় জীবন থেকে ২৩টি বছর। ৯ মাসে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করেছিল, কিন্তু এটা মাস নয়, পাহাড়ে বছরের হিসেব হচ্ছে। ২৩ বছরে ৪-৫টি সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম অবস্থায় আওয়ামী লীগ সরকার চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সময় পেয়েছিল ৩ বছর ৮ মাস আর দ্বিতীয় পর্যায়ে বিএনপি সরকার ৫ বছর সময় পেয়েও চুক্তির মৌলিক বিষয়ে হাত দিতে পারেনি এবং এভাবে সর্বশেষ আওয়ামী লীগ আবারও ২০০৯ সালে জাতীয় নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ট ভোট পেয়ে সরকার গঠন করেছে। ২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসীন। চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছেও তাদের আমলে। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানের জন্য আওয়ামী লীগের কৃতিত্ব আছে। অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার লালনকারী হিসেবে আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশের মানুষ চিনতো এবং জানতো। কিন্তু দীর্ঘ ২৩ বছর পরেও পিছিয়ে পড়া জুম্ম জনগণের আশা-আকাঙ্খা পূরণ করতে পারেনি এবং তারা নিজেদের দেওয়া প্রতিশ্রুতিও রক্ষা করতে পারেনি। আজ আওয়ামী লীগকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালনকারী বললে যতেষ্ট বিতর্কিত মনে হয়।
বর্তমান সময়ে জুম্ম জনগণের মনে শাসকগোষ্ঠীর প্রতি দীর্ঘ সময় ধরে জমানো পুঞ্জিভূত ক্ষোভ পুষে রাখতে বড্ড বেশি কষ্ট হচ্ছে। মানুষের মধ্যে পুঞ্জিভূত ক্ষোভ, তীব্র ঘৃণা ও যন্ত্রণা যখন অন্তরে জমা হয় তখন সেটা বিস্ফোরণ হয়ে চারিদিকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেয় প্রতিটি বস্তুপিণ্ডকে। জুম্ম জনগণের এখন বুঝতে আর বাকী নেই, শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শুধুমাত্র প্রতিবাদ করে আর হবে না। এখন জুম্ম জনতাকে শাসকগোষ্ঠীর সকল প্রকার দমন-পীড়ন ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের ভাষায় যথোপযুক্ত জবাব দেওয়া ছাড়া বিকল্প কোন রাস্তা নেই। ২৩ বছরেও চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ায় দুই যুগের অধিক সশস্ত্র লড়াই সংগ্রামের ত্যাগ ও রক্ত বৃথায় চলে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে নিপীড়িত জুম্ম জনগণ ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করেছে; কিন্তু আজ চুড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে হবে, শাসকগোষ্ঠী পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন করবে না। আজ শাসকগোষ্ঠীর সাথে জুম্ম জনগণের সাত সাগর তের নদীর দূরত্ব আস্থা ও বিশ্বাসের দেয়াল তৈরি হয়েছে। জুম্ম জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসের উপর শাসকগোষ্ঠী একবার নয়, বারবার আঘাত করেছে। ২৩ বছর জুম্ম জাতীয় জীবন থেকে কোন অর্জন ছাড়া এমনি হারিয়ে যাওয়া একজন সচেতন নাগরিক কখনো মেনে নিতে পারছে না। ফলে চরম ব্যর্থতা ও হতাশার গ্লানিকে সাথী করে শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আবারও নতুন করে সংগ্রামে সামিল হওয়ার জন্য মনের মধ্যে নিরব বিপ্লব ঘটে চলেছে। অথচ পাহাড়ের মানুষ খুবই শান্তিপ্রিয় এবং সহজ-সরল জীবন যাপনের অভ্যস্ত। পাহাড়ের মানুষ কোনকালেই শাসকগোষ্ঠীর সাথে সংঘাত চায়নি, যুদ্ধ ও রক্তপাত কখনো প্রত্যাশা করেনি। কিন্তু শাসকগোষ্ঠীর আচরণ বারেবারে জুম্ম জনগণকে সংঘাত ও রক্তপাতের অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি দিকে নিয়ে যেতে বাধ্য করেছে। স্বাধীনতার পরবর্তীতেও তাই হয়েছে এবং বর্তমানেও শাসকগোষ্ঠীর আচরণ তারই চুড়ান্ত ইঙ্গিত দিচ্ছে।
আজ চুক্তির ২৩তম বর্ষপূর্তিতে আমাদের জুম্ম জনগণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়, অধিকার বা অস্তিত্ব রক্ষা আগে হবে নাকি অন্য কিছু? জুম্ম জাতির জন্য কোনটা আগে জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে সিদ্ধান্ত যদি হয় অস্তিত্ব রক্ষা করা আগেই জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ তাহলে সেটাই করতে হবে। আমরা যদি মনে করি বিজ্ঞান ও তথ্য, প্রযুক্তির আধুনিক যুগে পাহাড়ের মানুষ পেছনে থাকতে চায় না। জুম্ম জাতি পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলের মানুষের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে চায়। মহাননেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার প্রসিদ্ধ উক্তি আমাদেরকে আজ স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে যে, “যে জাতি সংগ্রাম করতে জানেনা, সে জাতি পৃথিবীর বুকে বেঁচে থাকার কোন অধিকার থাকতে পারেনা”। তাহলে চুড়ান্ত বিশ্লেষণে পার্বত্য চট্টগ্রামে বেঁচে থাকতে হলে লড়াই সংগ্রাম ছাড়া কোন বিকল্প পথ নেই!
সুহৃদ চাকমা; পাহাড়ের আদিবাসী অধিকার কর্মী।