মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার ইছাছড়া খাসিয়াপুঞ্জিতে সম্প্রতি হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছে নাগরিক প্রতিনিধিদল।গতকাল শনিবার (২১ নভেম্বর) এক নাগরিক প্রতিনিধিদলের সদস্যরা উক্ত পুঞ্জি পরিদর্শনের সময় এই দাবী করেন।
গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের জ্যেষ্ঠ কর্মসূচী ম্যানেজার এভিলিনা চাকমার নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি নাগরিক প্রতিনিধিদল সেখানে যায়। উক্ত প্রতিনিধি দলে ছিলেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সিলেট বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম চৌধুরী, হবিগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তফাজ্জল সোহেল, মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আ স ম সালেহ, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের কেন্দ্রীয় ছাত্র ও যুববিষয়ক সম্পাদক রিপন চন্দ্র বানাই প্রমুখ। এছাড়াও আদিবাসী পরিবেশ আন্দোলনের সিলেট বিভাগের সমন্বয়ক জোসেফ গোমেজ এবং কুলাউড়ায় কুবরাজের সাধারণ সম্পাদক ফ্লোরা বাবলি তালাং সেখা উপস্থিত ছিলেন।
উক্ত ইছাছড়া খাসিয়া পুঞ্জিতে ৫২টি খাসিয়া পরিবার বসবাস করেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, সেখানকার বাসিন্দা জেসপার আমলেংরংয়ের প্রায় পাঁচ একর জায়গায় একটি পান জুমে গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে টাট্রিউলি গ্রামের বাসিন্দা রফিক মিয়ার নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জন লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জুমটি দখল করে নেয়া। এ ব্যাপারে জেসপার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
উক্ত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ নভেম্বর ইউএনও এ টি এম ফরহাদ চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি দল জুমে গিয়ে অভিযান চালালে জুমে অবৈধভাবে নির্মিত দুটি কাঁচা ও টিনশেডের একটি আধা পাকা ঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে প্রশাসনের কর্মকর্তারা ওই জমি জেসপারকে বুঝিয়ে দিয়ে যায় এবং সেদিন সন্ধ্যায় রফিক মিয়ার নেতৃত্বে প্রতিপক্ষের ৫০ থেকে ৬০ জন লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পুঞ্জির আশপাশে অবস্থান নেয় । পরে একটি মুদিদোকান ও পুঞ্জির গির্জায় ঢুকে ভাঙচুর ও আসবাবপত্র তছনছ করেন। এ সময় পুঞ্জির লোকজন বাধা দিতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে প্রায় আধা ঘণ্টা পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। এ ঘটনায় রফিক মিয়াসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে কুলাউড়া থানায় একটি মামলা হয়।
উক্ত ঘটনা প্রসঙ্গে কুলাউড়া থানার ওসি বিনয় ভূষণ রায় বলেন, মামলার এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তার করে মৌলভীবাজারের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আরও তিন আসামি আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। তবে প্রধান আসামি পলাতক আছে বলে জানিয়েছেন তিনি। প্রধান আসামী সহ অপর আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও আশ্বাস তাঁর।