সূভাষ চন্দ্র হেমব্রম, রাজশাহী: আদিবাসী জনজীবনে কোভিড ১৯ মহামারির প্রভাব বিষয়ে আজ ৭ নভেম্বর২০২১, রবিবার সন্ধ্যা ৭টায় আইপিনিউজ এর আয়োজনে অনলাইন আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
আইপিনিউজ এর আয়োজনে অনলাইন আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাধারণ সম্পাদক, আদিবাসী যুব পরিষদ নরেন চন্দ্র পাহান, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের পাবনা জেলা কমিটি সভাপতি রামপ্রসাদ মাহাতো, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের নাটোর জেলা কমিটি সভাপতি প্রদীপ লাকড়া, আদিবাসী যুব পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটি সহ-সভাপতি নবদ্বীপ লাকড়া, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের নিয়ামতপুর উপজেলা কমিটি সাধারণ সম্পাদক আজিত মুন্ডা, আদিবাসী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটি সহ-সভাপতি ও সভাপতি, রাহালা রিমিল ডান্স গ্রুপ সাবিত্রী হেমব্রম, আদিবাসী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য কাজল পাড়ে, আদিবাসী ছাত্র পরিষদের চাটমোহর উপজেলা শাখা আহ্বায়ক অপূর্ব কুমার সিং।
আইপিনিউজ এর অনলাইন আলোচনা সঞ্চলনা করেন আইপিনিউজের রাজশাহী প্রতিনিধি সূভাষ চন্দ্র হেমব্রম।
অনলাইন আলোচনায় বক্তারা বলেন, অধিকাংশ আদিবাসীরা প্রান্তিক এলাকায় বসবাসের কারণে, কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস মহামারী সচেতনতার অভাবে গুরুত্ব সহকারে দেখেনি। অনেকেই এই মহামারী প্রতিরোধে কি করনীয় বা পরিস্থিতি মোকাবেলায় কিভাবে সুস্থ থাকা যায় এই বিষয়গুলো জানেন না। তাদের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতার অভাব রয়েছে। আদিবাসীরা এই করোনা মহামারী পরিস্থিতিতে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা, সংস্কৃতি সার্বিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়েছে। এছাড়াও আদিবাসী নারীরা স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে ছিল। আদিবাসী নারীরা শুধুমাত্র কৃষিক্ষেত্রে নয় ভাটা,গার্মেন্টস, শ্রমিক, দিনমজুর পার্লার সহ বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। করোনা পরিস্থিতির কারণে এই বিভিন্ন সেক্টর থেকে কাজ হারিয়েছে। তারা আর সেভাবে কাজ করার সুযোগও পাচ্ছে না যার কারণে অর্থনৈতিক চাহিদা পূরণেও নারী ও পুরুষ উভয় পিছিয়ে পড়ছে আদিবাসীরা। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে আদিবাসী শিক্ষার্থীরা অনেকেই ঝরে পড়েছে আবার অনেকের বাল্য বিবাহ হয়েছে। এছাড়াও অনেক ছাত্র ছাত্রীকে শ্রমিক, দিন মজুর হিসেবেও কাজ করতে হয়েছে। আমরা দেখেছি সরকার অনলাইনে পড়াশোনা ব্যবস্থা/ পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন কিন্তু আদিবাসী শিক্ষার্থীরা অর্থনৈতিক ভাবে অসচ্ছল হওয়ায় ডিজিটাল মাধ্যমে তারা তাদের পড়াশোনা চলমান রাখতে সক্ষম হয়নি। আমরা এই মহামারীতেও আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে বিভিন্নভাবে আদিবাসীর উপর হামলা, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা, সহিংসতার ঘটনাও ঘটতে দেখা গেছে। এর সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে আমরা কোনো পদক্ষেপও নিতে পারিনি। করোনা পরীক্ষা করতেও ভয় পেতো। আবার যখন করোনা মহামারী মোকাবিলায় সরকার টিকা গ্রহনের ব্যবস্থা করলো তখনও আদিবাসীরা টিকা গ্রহণে আগ্রহ প্রকাশ করে নি। যার কারনে এখনো আদিবাসীরা টিকা গ্রহণের হারের দিক থেকে পিছিয়ে আছে। অনেকে এই মহামারীতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। এই সময় প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, আয়রন, ক্যালরিযুক্ত খাবার আদিবাসীদের সংকট ছিল। পরিশেষে বলা যায় আদিবাসীরা শিক্ষা ও সচেতনতার দিক থেকে অনেকটা পিছিয়ে তাদের শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন আছে।