রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ বিকেলে অভিনেত্রী পরীমণির মুক্তির দাবীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিক্ষুব্দ নাগরিকজন। সমাবেশে বক্তারা অনতিবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবী জানান। বক্তারা বলেন পরীমণিকে প্রাপ্য সম্মান দেওয়া হোক। পরীমণি অভিনয়জগতে ফিরে আসুক। পরীমণির হাতে নির্মাণাধীন প্রীতিলতা সহ বহু চলচিত্র রয়েছে। পরীমণি আটক থাকার কারণে এসব চলচিত্র নির্মাণের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। আমরা চাই শীঘ্রই পরীমণি স্যুটিং সেট এ ফিরে আসুক।
নির্মাণাধীন চলচিত্র প্রীতিলতা-র পরিচালক রাশেদ পলাশ বলেন, আমি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে কিছু বলতে চাই না। আমি শুধু এটুকু বলতে চাই মেধাবী অভিনেত্রী পরীমণিকে শীঘ্রই মুক্তি দেওয়া হোক। তিনি আরো বলেন, পরীমনি একজন শিল্পী। একজন শিল্পীর বিরুদ্ধে এমন হেনস্থা, অনাচার মেনে নেওয়া যায় না।
মানবাধিকার সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশনের মুশফিকা লাইজুম বলেন- পরীমণি একজন শিল্পী এবং একজন নারী। পরীমণির বিরুদ্ধে যা হচ্ছে তা মানবাধিকারের লঙ্ঘন। পরীমণির যদি সত্যই কোন অপরাধ থেকে থাকে তবে প্রচলিত আইনে তার বিচারকার্য হতে পারে। কিন্তু আইন প্রয়োগের নামে তাঁর বিচারবহির্ভূতভাবে ব্যক্তিগত জীবনে হস্তক্ষেপ করা, অস্বস্তিতে ফেরা, তাঁর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙঘন করা মেনে নেওয়া যায় না।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক নেতা শরীফুজ্জামান শরীফ বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পার করছি আমরা। রাষ্ট্র আইনের শাসনে চলছে না, শাসকের স্বার্থে চলছে। পুলিশের কাছ থেকে পরীমণির বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উত্থাপন করা হচ্ছে সেগুলো বোটক্লাবের ঘটনার আগে শোনা যায় নি। আমরা পরীমণির জন্য ন্যায়বিচার চাই। একজনকে বিচার করবেন কিন্তু আরেকজনকে ধরবেন না এমন হতে পারে না।
শ্রাবণ প্রকাশনীর প্রকাশক এবং সমাবেশের সমন্বয়ক রবিন আহসান বলেন, পরীমণিকে গ্রেফতার করার পরে সংবাদমাধ্যম গুলো যেসব সংবাদ পরিবেশন করা হচ্ছে, পরীমণির ঘটনাপ্রবাহকে কেন্দ্র করে যেসব অপপ্রচার হচ্ছে সেসব কেবল পরীমণির বিরুদ্ধে নয়। পরীমণির ঘটনাপ্রবাহকে কেন্দ্র করে পুরো নারী সমাজকেই আজ অবমাননা করা হচ্ছে। কয়েক বোতল মদের জন্য পরীমণিকে দিনের পর দিনের রিমান্ডে নেওয়া হচ্ছে। বোটক্লাবের মানুষজনকে বাঁচানোর জন্যই পরীমণিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরীমণিকে মুক্তি না দিলে সমাজের সর্বস্তরের সবাইকে নিয়ে সকল সাংস্কৃতিক জোট মিলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সমাবেশ চলাকালীন সময়ে লন্ডন থেকে মোবাইলের মাধ্যমে সংহতি প্রকাশ করেন লেখক ও কলামিস্ট আব্দুল গফফার চৌধুরী। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন মানবাধিকারকর্মী জনানী, শ্বাশ্বতী বিপ্লব, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) এর তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক কাজী সালমা সুলতানা, যুব ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামনা মাসুম।